বিদেশে এসে বাংলা চর্চা করার খুব প্রয়োজন বোধ করি যখন থেকে দেখতে থাকি এখানে বাঙালী বাবা-মায়েরা তাদের সন্তান যদি আমেরিকান হিসেবে গড়ে ওঠে তাতে বেশী তৃপ্ত হয়। বাংলা পড়াটা মোটামুটি চালিয়ে যেতাম বাবার জন্য এখানকার স্থাণীয় পত্রিকা আনলে সেটা পড়ে। লেখার জন্য মাধ্যম হয়ে ওঠে অভ্র।
যেদিন থেকে অভ্র ব্যবহার শুরু করেছি, সেদিন থেকেই এটার খুব ভক্ত হয়ে উঠেছি। বাংলা লেখা যে এতো সহজেই কম্পিউটারে সম্ভব তা আমার জানা ছিল না (যেহেতু একজন নন-টেকি মানুষ)। অভ্র'র নির্মাতা, ও অমিক্রনল্যাবের সকলকে এই সফটওয়্যারটা তৈরির জন্য বিশাল ধন্যবাদ সবসময়ই দেই যখন অভ্র ব্যবহার করি।
শুধু একটা ছোট উদাহরণ দেই কিভাবে অভ্র এখানকার কিছু মানুষের/কমিউনিটির উপকার করেছে। আমার পরিচিত এখানকার এক বাঙালী প্রফেস্যার আংকেল আছেন। উনি বাংলা লেখালেখি করেন। দু-তিন বছর আগেও উনি নাকি বিজয় ব্যবহার করতেন। কিন্তু অভ্রের সাথে পরিচিত হওয়ার পর থেকে (আমি বলার আগেই উনি অভ্র সম্পর্কে জানতে পারেন ও এটি ব্যবহার শুরু করেন) উনি এখন বিজয় দিয়ে লেখা লিখতে যে সময় লাগত তার চেয়ে অনেক গুণ কম সময়ে লিখতে পারেন অভ্র দিয়ে। উনি বলেন, লেআউটটা সত্যিই সহজ।
আরেকটা উদাহরণ দেই। গত বছর এখানকার এক মন্দির কমিউনিটির বার্ষিক ম্যাগাজিন যেটি দুর্গাপূজায় বের হয়ে থাকে সেটি কম্পিউটারে কম্পোজের দায়িত্ব দেয়া হয় আমাকে। পুরো ম্যাগাজিনটা নাকি এক ব্যক্তি আগে বিজয় দিয়ে করতেন। কিন্তু আমাকে দেবার পরে ৪-৫ দিনের মধ্যে পুরো জিনিসটা শেষ করার পরে উনারাও অবাক। উনারাও উপকৃত হন ও অভ্র সম্পর্কে ধারণা হয় তাদের মাঝেও। (সম্ভবত এ বছরও দায়িত্ব পড়তে পারে!)
বিজয় সম্পর্কে জানতে পারি এই ফোরামিং-ব্লগিং দুনিয়া থেকেই। সাথে আরো জানতে পারি এর পেছনের মোস্তফা জব্বার সম্পর্কে, উনার অবদান (!) বাংলা ভাষার প্রসারে।
আমি খুব বেশী দ্রুত টাইপিস্ট নই। ইংরেজীতে যদিও মোটামুটি, কিন্তু বাংলাতে ততটা না যেটাকে দ্রুত টাইপিস্ট বলা যায়। কিন্তু এই অভ্র ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলা লেখা শুধু সহজই না, বলতে গেলে ফাস্ট আমার ক্ষেত্রে। আমার মতে, এ শুধুমাত্র সম্ভব হয়েছে অভ্র ব্যবহারের মাধ্যমে। যেমনভাবে বলছি, ঠিক তেমনভাবেই লিখছি। অনেকে বলবেন, যার যেটাতে হাত বসে গেছে। কিন্তু আমি শুধু এটুকুই বলব, যার যেটাতেই হাত বসুক না কেন, একজন নতুন ব্যক্তি বাংলা লিখতে যদি অভ্র ব্যবহার শুরু করেন, তাহলে তার অন্যান্য যেকোনো সফটওয়্যারগুলোর চেয়ে সবচেয়ে কম সময় লাগবে বাংলা লেখা শিখতে। অন্তত একজন নন-টেকি হিসেবে এটাই অভিজ্ঞতা হয়েছে আমার অভ্র ব্যবহার করে।
পরিশেষে আবারও ধন্যবাদ জানাতে চাই অমিক্রনল্যাবকে ও মেহদী হাসান ভাইকে অভ্রের মতো এমন একটি সফটওয়্যার তৈরির জন্য। বর্তমান অভ্র-বিজয় যুদ্ধে উনার ও উনার অভ্রের বিজয় (জব্বারের 'বিজয়' না) আশা করছি।
ধন্যবাদ
ReplyDelete