Showing posts with label Shibir. Show all posts
Showing posts with label Shibir. Show all posts

Saturday, August 03, 2013

HSC পরীক্ষার্থীদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ

এবারের ২০১৩ সালের বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত HSC (Higher Secondary Certification) পরীক্ষায় তুলনামূলকভাবে অন্যান্য বছরগুলোর তুলনায় ফলাফল সর্বোপরি খারাপ হয়েছে। গত বছর যেখানে ৭৮% ছাত্র-ছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছিলো সেখানে এবছর সেই পাসের হার ৭৪%। প্রায় তিন হাজার কম সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী GPA-5 পেয়েছে। 

প্রশ্ন হলো কেন এই ফল বিপর্যয়? কেন তুলনামূলক অন্যান্য বছরের চেয়ে এবছর ফলাফল খারাপ হলো ছাত্র-ছাত্রীদের? 

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন যে, লাগাতার হরতাল-সহিংসতা ইত্যাদি থাকার ফলে ছেলে-মেয়েদের মনে স্বাভাবিকভাবেই একটা ভয় বিরাজ করেছে পুরো পরীক্ষার সময়। শুধুমাত্র প্রথম পরীক্ষাই কোনো রকম রাজনৈতিক কর্মসূচী বাদে পরিচালিত হয়েছে। পরবর্তীতে নয় দিন পরীক্ষা পিছিয়েছে। ফলে ছেলে-মেয়েদের মানসিক যে প্রস্তুতি সেটা বারংবার ব্যাহত হয়েছে। এর দায় বিএনপি-জামায়াত-হেফাজতে ইসলাম এড়াতে পারবে না। এমনকি কেউ কেউ বলছেন, যেই মহিলা নিজেই HSC পাস করতে পারেননি, তিনি কেন চাইবেন দেশের হাজার হাজার শিক্ষার্থীরা তার চেয়ে বেশী শিক্ষিত হোক।

সে যাই হোক। একদিকে যেমন সরকারী পক্ষ বিরোধীদের দোষারোপ করছে। আবার বিরোধীরা দুষছে সরকারী পক্ষকে। বিএনপির মহাসচিব বলেছেন, সরকারপক্ষ তাদের নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে বিরোধীদের উপর দোষ চাপাচ্ছেন। সেটার সাথে আবার বিরোধী সমর্থকরা একমতই পোষণ করছে।

আমার আবেদনটা মূলত HSC পরীক্ষার্থী/শিক্ষার্থীদের কাছে। তারা (তোমরা) যে যেই ফলাফল করেছ না কেন বেশীরভাগেরই আশানুরূপ ফলাফল হয়নি। সবাই চেয়েছিল Golden GPA-5 পেতে, কিন্তু ক'জনায় তা পেরেছে? দোষ দাও বিএনপিকে, জামায়াতকে, হেফাজতকে কিংবা আওয়ামী লীগকে, তারা কেউই কিন্তু প্রকৃতভাবে তোমাদের ফলাফলে কোনো মাথাব্যথা করছে না। আজ যদি সরকারীপক্ষ আওয়ামী লীগ না হয়ে বিএনপি হতো এবং এমন হরতাল-অবরোধ-সহিংসতা ঘটতো, তাহলে লোকজন বিরোধীদের দুষত। 

আমার পয়েন্ট হলো, আওয়ামী-বিএনপি-জামায়াত-হেফাজত এরা কেউই প্রকৃতভাবে দেশের আপামত জনসাধারণের ভালো চায় না। ফলে একটা ছেলের ভবিষ্যত যদি নষ্ট হয়ে যায় তাদের হরতাল-অবরোধের কারণে তাতে তাদের কিছুই আসে যায় না। হয়ত সেই পরিবারের লোকজনরা সেই ছেলেটির ফলাফলের দিকেই তাকিয়ে ছিলো যেন ছেলে ভালো ফল করলে ভালো কাজে ঢুকতে পারবে, সংসারে টানা-পোড়েন থাকবে না। কিংবা হয়ত সেই মেয়েটি যে বাবা-মায়ের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো যে সে যদি পরীক্ষায় পাস করে তাহলে তাকে বিয়ে না দিয়ে আরো পড়াশোনা করাবে বাবা-মা। সেই মেয়েটির স্বপ্ন হয়ত স্বপ্নই রয়ে যাবে। এমন নানা ঘটনাই হয়ত আমাদের অজান্তেই থেকে যাবে। কই এনে দেবে কোনো চাকরী সেই ছেলেটার জন্য যে তার পরিবারের আশার আলো দেখানো স্বপ্ন নিয়ে Golden GPA-5 এর লক্ষ্যে পড়াশোনা করেছিলো? এনে দেবে কোনো সরকারী-বিরোধী কিংবা ইসলামী কোনো দল-গোষ্ঠী? বন্ধ করতে পারবে সেই মেয়েটির বিয়ে যে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের ফলে বাবা-মার কাছে মুখ তুলে তাকাতে পারবে না? পারবে কোনো দল-পার্টি এই ক্ষেত্রে কিছু করতে? পারবে যদিওবা, কিন্তু করবে না। করছে না। আজ পর্যন্ত করেনি। ভবিষ্যতেও করবে কিনা সন্দেহ।

মনে যদি শান্তি না থাকে তাহলে দেহে শান্তি মেলে না। আর দেহ-মন দুটোই যদি খারাপ থাকে তাহলে পরীক্ষায় যতই পড়াশোনা, প্রস্তুতি থাকুক না কেন, ফলাফল সচরাচর ভালো হয় না। আমি নিশ্চিত সেটাই ঘটেছে বাংলাদেশে এবারের ২০১৩ সালের HSC পরীক্ষার্থীদের বেশীরভাগের ক্ষেত্রে।

একটা ছেলের ভবিষ্যত ধ্বংস করতে একটা রাজনৈতিক দলই যথেষ্ট। একটা মেয়ের স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ করতে একটা সরকারী-বিরোধী পার্টিই যথেষ্ট। কেউ সেই ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যত-স্বপ্ন নিয়ে চিন্তা করে না। কমপক্ষে বাংলাদেশ-ভারতের মতো দেশগুলোর রাজনৈতিক কোনো দল তো নয়ই। 

তাই আমার আহবান, যেসব পরীক্ষার্থীরা খারাপ করেছে, মন মতো ফলাফল করোনি, তারা সামনের নির্বাচন বর্জন করো। বয়কট করো। কি ফলাফল এনে দেবে যদি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যায়? কি সুফল বয়ে আনবে যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসে? কি লাভ হবে তোমাদের নিজেদের? বরং ক্ষতির পরিমাণটাই বেশী। হয়ত সামনের বার তোমার না হোক, তোমার কোনো ভাই-বোন, কিংবা আত্মীয়-স্বজনের এরকমভাবে ভবিষ্যত স্বপ্ন নষ্ট হবে। 

প্রশ্ন করবে কী হবে আমি একজন বয়কট করলে? তুমি একজনের দেখাদেখি আরেকজন করবে যে নিজেও হয়ত এমন ভুক্তভোগী। আর তাছাড়া, নিজের বিবেকের কাছে তো বলতে পারবে সামনের বার যখন এমন ফলাফল ঘটবে যে, না, আমি ওই স্বার্থান্বেষী মহলকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনিনি। কিংবা আমি ওই ক্ষমতালোভীদের বাক্যের জালে পড়িনি।

আমাকে হয়ত অনেকেই ভুল বলবেন। আমি বলাতে কে ভোট দিলো কি না দিলো তাতে কি যায় আসে। যে ক্ষমতায় যাবে, সে ঠিকই যাবে এই ক'জন ভোট দিক আর না দিক। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে আমি নিশ্চিত সেইসব খারাপ ফলাফল করা ছেলে-মেয়েরা মনের দিক থেকে নিশ্চয়ই একটা শান্তি অনুভব করবে।

Thursday, May 16, 2013

পুলিশও মানুষ


ইনাদের আমরা সুযোগ পেলেই গালমন্দ করি; অভিশাপ দিই। অথচ একবারও চিন্তা করিনা এই মানুষগুলো না থাকলে চুরি-ছিনতাই কি হারে বেড়ে যাবে? মন্ত্রীরা এত প্রটোকল কিভাবে পাবে? ঈদের নামাজ কিংবা পহেলা বৈশাখ শান্তিপূর্ণভাবে কিভাবে উদযাপন করবো? সরকারী চাকুরীজীবীরা শুক্র-শনি ছুটি পেলেও এদের কোন ডে-অফ নেই। এদের কি সংসার নেই? তাদের সন্তানরা বাবাকে কতটা সময় কাছে পায়। অথচ পিতৃস্নেহ অধিকার থেকে নিজেদের সন্তানকে বঞ্চিত করে এরাই হাজারো সন্তানের জন্য রাতজেগে বন্দুক কাঁধে নিয়ে ডিউটি করেন আর নিরবে কান্না করেন। অথচ এদের কান্নার কোন দাম আছে?
পুলিশের মেসের খাবার কেউ একটু খেয়ে দেখবেন? অথচ এরা রাষ্ট্রের অত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে কিন্তু সরকার তাদের মূল্যায়ন করে না। সরকার টাকা দেয় সবুজ উর্দিওয়ালাদের। উর্ধ্বতন অফিসারদের কমিশনের সুবিধা দিতে ১৬ হাজার কোটি টাকা দিয়ে রাশিয়া থেকে অস্ত্র কিনেন। প্রতিবছর চকচকে নতুন গাড়ি আসে; একটু পুরোনা হলেই গাড়ির চাক্কা বদলে যায়। আর লক্করঝক্করমার্কা গাড়ি নিয়ে ডিউটি করেন টোল্লা! পুলিশ।
এরা রক্ত ঝরায়; সর্বোচ্চ ধৈর্য্য দেখায়। সরকার প্যাদায়; পাতি নেদারা পেদায়। আর আমরা কত রাগ ঝারি। এতমোটা পোষাক পড়ে ঠাঠারোদে একটু ডিউটি করেন; দেখবেন চান্দি গরম হয়ে যাবে। অথচ কাগজ ছাড়া মোটরসাইকেল চালিয়ে বড়ভাইদের ফাপড় নিই। অথচ এই পোষাক পড়ে ডিউটি করুন না একটু।

একাত্তরে সবার আগে রক্ত দিয়েছে পুলিশ। ৮৫৬জন রাজারবাগে শহীদ হয়েছিল। অথচ একজন পুলিশও বীরশ্রেষ্ঠ খেতাব পায়নি। এরা মরে গেলে আমরা সাংবাদিকরা বলি পুলিশ! নিহত। এদের রক্তের দাম কি মূল্যহীন?

সব পেশাকে সম্মান করুন। মানুষের কর্মকে সম্মান করুন।

(সংগৃহীত)